গাজীপুরের শ্রীপুরে মা ও পাঁচ বছরের শিশুকে হত্যার ঘটনার এক মাস পর হত্যাকারী রহমত উল্লাহকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
আজ শুক্রবার (১০ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য নিশ্চিত করে কালিয়াকৈর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার আজমীর হোসেন।
কালিয়াকৈর সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার আজমীর হোসেন জানান, গত ৭ জানুয়ারি বিকেলে শ্রীপুর উপজেলার কেওয়া পশ্চিম খণ্ড গ্রামের দাইপাড়া এলাকায় নিজ বাড়ি থেকে রুবিনা (২২) ও তার ছেলে জিহাদের (৪) মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। গত বুধবার (৮ ফেব্রুয়ারি) রাতে ঝিনাইদহের মহেশপুর সীমান্ত এলাকা থেকে রহমত উল্লাহকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সহকারী পুলিশ সুপার আজমীর হোসেন জানান, বাবার দেয়া জমিতে উপজেলার কেওয়া পশ্চিম খণ্ড গ্রামে আধাপাকা বাড়িতে পাঁচ বছর বয়সী ছেলেকে নিয়ে বসবাস করতেন রুবিনা। রুবিনার বাড়ির পাশেই পেশায় রংমিস্ত্রি রহমত উল্লাহ ভাড়া থাকতেন। রুবিনার আধাপাকা বাড়িটি রং করানোর জন্য রংমিস্ত্রি রহমত উল্লাহর কাছে যান তিনি। সেখান থেকেই তাদের পরিচয় হয় এবং ভালো সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এছাড়া রুবিনা বাড়ির বাজারসহ অন্যান্য কাজকর্ম রহমত উল্লাহকে দিয়েই করাতেন। একদিন রুবিনাকে শারীরিক সম্পর্কের প্রস্তাব দেন তিনি। প্রথমে প্রস্তাবে রাজি না হলেও একপর্যায়ে রাজি হন রুবিনা। তবে রাতে বাড়ি আসতে বলে রুবিনা গেট খুলতেন না।
গত ৩ জানুয়ারি রাত ৮টায় রহমত উল্লাহ শারীরিক সম্পর্কের জন্য রুবিনার বাসায় গেলে সেখানে তিনি অর্ধঅচেতন অবস্থায় রুবিনাকে খাটের ওপর শুয়ে থাকতে এবং ছেলে জিহাদকে মোবাইলে গেম খেলতে দেখেন। রাত ১০টায় জিহাদ ঘুমিয়ে পড়লে খাটে শুয়ে থাকা অর্ধঅচেতন অবস্থায় শারীরিক সম্পর্ক করতে গেলে তাকে বাধা দেন রুবিনা।
পরে তাদের মধ্যে ধস্তাধস্তি হয়। একপর্যায়ে জিহাদের গায়ের ওপর পড়লে সে ঘুম থেকে জেগে ওঠে। এসময় রহমত উল্লাহ ডান হাত দিয়ে জিহাদের গলা আর বাম হাত দিয়ে রুবিনার গলা চেপে ধরে। জিহাদ নিস্তেজ হয়ে মারা যায়। পরে রুবিনাকেও গলা টিপে হত্যা করে রহমত উল্লাহ।
শ্রীপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান বলেন, পুলিশি তৎপরতার পর রহমত উল্লাহ ভারতে চলে যান। পরে কৌশলে দুই দেশের দালালদের মাধ্যমে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করেছেন।
Leave a Reply