কেরানীগঞ্জ (ঢাকা) : ঢাকার কেরাণীগঞ্জের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ইউনিক আইডির জন্য রক্তের গ্রুপ নির্ণয় করার জন্য সহায়তা করছে সেচ্ছাসেবী সংগঠন। এ কাজে প্রশংসনীয় ভূমিকা পালন করছে কেরাণীগঞ্জ ব্লাড ডোনার্স ক্লাব।
সরকার নিবন্ধিত উপজেলার একমাত্র স্বেছায় রক্তদানের এই সংগঠনটি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ বিভিন্ন কিন্ডারগার্টেন ও মাদ্রাসায় গিয়ে গিয়ে ক্ষুদে শিক্ষার্থীদের এমন সহযোগিতা প্রদান করছে। অভিভাবক ও শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, শিক্ষার্থীদের ইউনিক আইডির জন্য রক্তের গ্রুপ জানা দরকার হওয়ায় বিপাকে পড়েন অভিভাবকেরা। তাঁদের বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে টাকা দিয়ে রক্তের গ্রুপ জানতে হচ্ছিল। তখন কেরাণীগঞ্জ ব্লাড ডোনার্স ক্লাব বিদ্যালয়ে বিদ্যালয়ে গিয়ে বিনা মূল্যে যে সেবা দিচ্ছে, তাতে অর্থের বিনিময়ে বাইরে গিয়ে রক্ত পরিক্ষার ভোগান্তি কমেছে।
সংগঠনটি তাদের ফেসবুক গ্রুপে উপজেলার সকল বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যের রক্তের গ্রুপ পরিক্ষা করে দেওয়ার ঘোষণা দেয়। ঘোষণা অনুযায়ী পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন স্কুলে তারা তাদের কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে। শাক্তা ইউনিয়নের কালুনগর সরকারি প্রাথমিক বিয়ালয়ের শিক্ষার্থীদের রক্তের গ্রুপ পরিক্ষা চলাকালিন সময়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা মেরী পারভীন চৌধুরি জানান সংগঠনটি বিদ্যালয়ে গিয়ে গিয়ে যে সেবা দিচ্ছে, তাতে সরকার ঘোষিত শিক্ষার্থীদের ইউনিক আইডি প্রোফাইল তৈরির কাজটি আমাদের জন্য সহজ হচ্ছে। এতদিন শিক্ষার্থী ও অভিবাবকদের বার বার বলার পরেও রক্তের গ্রুপ জানতে অনেক সমস্যা ও সময় লাগছিলো, এখন পুরো স্কুলের শিক্ষার্থীদের রক্তের গ্রুপ এক দিনেই জানতে পারছি।
সংগঠনের অন্যতম উদ্যোক্তা শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘আমরা উপজেলার বিভিন্ন স্কুল, মাদ্রাসা ও কিন্ডারগার্টেনের তালিকা করে ধারাবাহিকভাবে শিক্ষার্থীদের রক্তের গ্রুপ জানিয়ে দিচ্ছি এবং শিক্ষার্থীদের হাতে নিজ নিজ রক্তের গ্রুপ সম্বলিত কার্ডও তুলে দিচ্ছি।’
তিনি আরো বলেন, কেরাণীগঞ্জ ব্লাড ডোনার্স ক্লাব এই পর্যন্ত ৫০টি ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে প্রায় ১৭ হাজার জনকে বিনামূল্যে রক্তের গ্রুপ পরিক্ষা করে দিয়েছে। গ্রাম ভিত্তিক বিভিন্ন ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে হাজারো দুস্থ্য মানুষকে বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা ও প্রয়োজনীয় ঔষদপত্র বিতরন করছে। এছাড়া প্রতিবছর ২ থেকে আড়াই হাজার ব্যাগ রক্ত সরবরাহ করছে সংগঠনের স্বেচ্ছাসেবীরা।
কেরাণীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মেহেদী হাসান জানান, পাঁচ বছর বয়সী প্রাক-প্রাথমিকের শিক্ষার্থী থেকে ১৭ বছর বয়সের দ্বাদশ শ্রেণির সব ছাত্রছাত্রী পাবে এই ইউনিক আইডি। এই আইডিতে একটি শনাক্ত নম্বর থাকবে, যা পরবর্তী সময়ে ওই শিক্ষার্থীর জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর হবে। জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরিতে আলাদা করে তথ্য সংগ্রহের প্রয়োজন হবে না। আর এ কারণে শিক্ষার্থীদের রক্তের গ্রুপ লাগছে এবং উপজেলার অন্যতম স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন কেরাণীগঞ্জ ব্লাড ডোনার্স ক্লাব এই ব্যাপারে দারুন সহযোগিতা করে যাচ্ছে।
Leave a Reply