দুর্বৃত্তদের ছুরিকাঘাতে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) শিক্ষার্থী বুলবুল আহমেদকে (২২) হত্যার প্রতিবাদে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়ে চার দফা দাবি জানিয়েছে শিক্ষার্থীরা। আজ মঙ্গলবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার ভবনের সামনে এক মানববন্ধন কর্মসূচিতে এ দাবি জানায় শিক্ষার্থীরা। এতে লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা অংশ নেন।
মানববন্ধনে বুলবুল হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় আনতে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেন শিক্ষার্থীরা। মানববন্ধন শেষে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন তারা।
শিক্ষার্থীদের চার দফা দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে- ২৪ ঘণ্টার ভেতরে খুনিদের গ্রেপ্তার করে দ্রুত আইনের আওতায় এনে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করতে হবে, নিহতের পরিবারকে অতি দ্রুত সর্বোচ্চ ক্ষতিপূরণ নিশ্চিত করতে হবে, ক্ষতিপূরণের পরিমাণ এবং প্রদানের উপায় সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করতে হবে, ক্যাম্পাসের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে, বুলবুলের স্মৃতি রক্ষার্থে বুলবুল হত্যার স্থানে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ এবং বুলবুল চত্ত্বর ঘোষণা করতে হবে।
মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা বলেন, নিজের ক্যাম্পাসে নিজেদের কোনো নিরাপত্তা নেই। আমরা দ্রুতই বুলবুল হত্যার সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করে কঠোর শাস্তির দাবি জানাচ্ছি এবং শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।
এ সময় লোকপ্রশাসন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. মো. শফিকুল ইসলাম অধ্যাপক, অধ্যাপক ড. শামীমা তাসমিম, অধ্যাপক ড. মো. আশরাফ সিদ্দিকী, সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ সামিউল ইসলামসহ বিভাগের শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে, এ ঘটনায় মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মুহম্মদ ইশফাকুল ইসলাম বাদী হয়ে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের জালালাবাদ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। এতে মামলায় অজ্ঞাত একাধিক দুষ্কৃতিকারীদের আসামি করা হয়েছে।
অন্যদিকে, বুলবুল হত্যার ঘটনায় সন্দেহভাজন তিনজন বহিরাগতকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পুলিশের উপ- কমিশনার (মিড়িয়া) বি এম আশরাফ আলী তাহের। তিনি জানান, শাবির শিক্ষার্থীর ঘটনায় তিনজন বহিরাগতকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আনা হয়েছে, তাদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। ক্যাম্পাসের আশেপাশে যারা মাদকাসক্ত, নেশাগ্রস্ত এবং অন্যান্য অপকর্মের সঙ্গে জড়িত আছে তাদেরকে আটক করার চেষ্টা চলছে।
জানা যায়, গতকাল সোমবার (২৫ জুলাই) সন্ধ্যায় এক সহপাঠীর সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে অবস্থিত গাজী কালুর টিলায় ঘুরতে যায় বুলবুল। পরে সেখানে অবস্থানকালীন সময়ে ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে আহত হন তিনি। এতে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের ফলে বুলবুল মাটিতে লুটে পড়ে। পরে শিক্ষার্থীরা জানতে পেরে সেখান থেকে তাকে উদ্ধার করে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে দায়িত্বরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
প্রসঙ্গত, বুলবুল আহমেদ শাবিপ্রবির লোকপ্রশাসন বিভাগের তৃতীয় (২০১৮-১৯ সেশন) বর্ষের শিক্ষার্থী। তিনি নরসিংদী সদরের চিনিশপুরম থানার নন্দিপাড়ার বাসিন্দা মো. ওহাব মিয়ার ছেলে।
Leave a Reply