টেকনাফে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর নির্মাণ নিয়ে সংবাদ প্রকাশের জেরে সাংবাদিক সাইদুল ফরহাদকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) মোহাম্মদ কায়সার খসরুর অকথ্য ভাষায় গালাগালিকে মাস্তানদের ভাষার চেয়েও খারাপ বলে মন্তব্য করেছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে কক্সবাজারের টেকনাফে মুজিববর্ষ উপলক্ষে সংবাদ প্রকাশ করার পর তার এমন ভাষা ব্যবহারকে দুঃখজনক ও অগ্রহণযোগ্য বলে জানিয়েছেন আদালত।
একজন সরকারি কর্মকর্তার এমন ব্যবহার পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন আদালতের নজরে আনা হলে রোববার এ মন্তব্য করেন বিচারপতি নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের বেঞ্চ।
মুজিববর্ষ উপলক্ষে আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের ওয়াব্রাং এলাকায় ভূমিহীন ও গৃহহীনদের জন্য ঘর নির্মাণ করে দেয়া হয়েছে। এরমধ্যে ২৭টি ঘরে জোয়ার ও বৃষ্টির পানি প্রবেশ করায় দুর্ভোগে পড়েন উপকারভোগীরা।
এ নিয়ে একটি অনলাইন পোর্টালে খবর প্রকাশিত হয়। এর জেরে গত বৃহস্পতিবার টেকনাফের ইউএনও মোহাম্মদ কায়সার খসরু সাংবাদিক সাইদুল ফরহাদকে ফোন করে অকথ্য ভাষায় গালি দেন। পরে ওই কথোপকথনের একটি অডিও রেকর্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে সমালোচনা শুরু হয়।
এ ঘটনায় গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ আদালতের নজরে আনেন আইনজীবী খুরশিদ আলম খান। এ সময় আদালত মন্তব্য করেন, ইউএনওর ভাষা খুবই আপত্তিকর, দুঃখজনক ও অগ্রহণযোগ্য। তিনি মাস্তানদের চেয়েও খারাপ ভাষায় কথা বলেছেন।
আদালত বলেন, যে ভাষা ব্যবহার করেছেন, তা অত্যন্ত দুঃখজনক ও অগ্রহণযোগ্য। রং হেডেড পারসন ছাড়া কেউ এভাবে বলতে পারে না। যে ভাষা ব্যবহার করেছেন, তা কোনো ভাষা হতে পারে না। দেখা যাচ্ছে, ইউএনও দুঃখ প্রকাশ করেছেন। এর অর্থ তাঁর বক্তব্য গ্রহণযোগ্য নয় বলে স্বীকার করে নিচ্ছেন।
আদালত আরো বলেন, সাংবাদিকেরা যদি কোনো অপরাধ করেন তাহলে আইন আছে, প্রেস কাউন্সিল আছে। কিন্তু, এভাবে গালিগালাজ গ্রহণযোগ্য নয়। পরে আদালত রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীকে ওই ইউএনওর বিরুদ্ধে বিভাগীয় কি ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে তা জানাতে নির্দেশ দেন।
এদিকে বিষয়টি জেলা প্রশাসকের নজরে এলে গত শুক্রবার সমাধানের জন্য দুপক্ষকে ডাকা হয়। সেখানে এ ঘটনার জন্য সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদকের কাছে দুঃখ প্রকাশ করে ক্ষমা চান ইউএনও।
Leave a Reply