ভারতের ১৫তম রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হলেন বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোটের প্রার্থী দ্রৌপদী মুর্মু। ভারতের প্রথম আদিবাসী ও দ্বিতীয় নারী রাষ্ট্রপতি হলেন তিনি। বৃহস্পতিবার তিন দফায় গণনা শেষে ৫০ শতাংশের বেশি ভোট পেয়ে রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন তিনি।
দ্রৌপদী মুর্মু ভোট পেয়েছেন ২১৬১টি। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী যশবন্ত সিনহাকে ১ হাজার ১০৩ ভোটে হারিয়েছেন তিনি। রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ভোট দেন দেশের প্রায় ৪ হাজার ৮০০ জন সংসদ সদস্য ও বিধায়ক।
বিশ্বের সবচেয়ে বড় গণতান্ত্রিক দেশের প্রেসিডেন্ট হলেন তিনি। ২৫ জুলাই শপথ নেবেন ৬৪ বছর বয়সী দ্রৌপদী। সোমবার দিল্লিতে দুই রাষ্ট্রপতি প্রার্থী দ্রৌপদী মুর্মু এবং যশবন্ত সিনহার মধ্যে একজনকে বেছে নিতে ভোট দেন দেশের প্রায় ৪ হাজার ৮০০ জন সংসদ সদস্য ও বিধায়ক। প্রেসিডেন্ট হওয়ার দৌড়ে আগে থেকেই এগিয়ে ছিলেন দ্রোপদী মুর্মু।
দিল্লিতে বিজেপির সদর দফতরের সামনে উৎসবের মেজাজ। বাজছে তাসা, চলছে মিষ্টিমুখের পালা।
দ্রৌপদীর জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ৫ লাখ ৪০ হাজার ৯৯৬ ভোটমূল্য। দ্রৌপদী ইতিমধ্যেই ভোটমূল্য পেয়ে গিয়েছেন ৫ লাখ ৭৭ হাজার ৭৭৭ ভোটমূল্য।
পূর্বনির্ধারিত সূচি মেনেই বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় সংসদ ভবনের সংসদ ভবনের ৬৩ নম্বর ঘরে শুরু হয় ভোটের গণনাপর্ব। বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোটের প্রার্থী দ্রৌপদী মুর্মু হতে চলেছেন বিদায়ী প্রেসিডেন্ট রামনাথ কোবিন্দের উত্তরসূরি।
প্রসঙ্গত, সোমবার হয়েছে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের ভোটগ্রহণ। ভোট পড়েছে ৯৮.৯ শতাংশ।
দ্রৌপদী মুর্মুর জন্ম ১৯৫৮ সালে ওড়িশার ময়ূরভঞ্জ জেলায়। আদিবাসী সাঁওতাল সম্প্রদায়ের মেয়ে। পরিবারে অভাব ছিল নিত্যসঙ্গী। তবে থেমে থাকেননি তিনি।
১৯৭৯ থেকে ১৯৮৩ সাল পর্যন্ত ওড়িশা সরকারের সেচ বিভাগে জুনিয়র সহকারী হিসেবে কাজ করেন দ্রৌপদী মুর্মু। পরে রায়রংপুরে শ্রী অরবিন্দ ইন্টিগ্রাল এডুকেশন সেন্টারে সহকারী অধ্যাপক হন।
ওই বছরই দ্রৌপদী মুর্মু যোগ দেন ভারতীয় জনতা পার্টি- বিজেপিতে। ওড়িশার রায়রংপুর নগর পঞ্চায়েতের কাউন্সিলর হিসেবে শুরু তার রাজনৈতিক জীবন।
২০০২ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত বিজেপির আদিবাসী মোর্চার জাতীয় কর্মসমিতির সদস্য ছিলেন। আর ওড়িশা বিজেপির আদিবাসী মোর্চার সভানেত্রীর দায়িত্বে ছিলেন ২০০৬ থেকে ২০০৯ পর্যন্ত। ২০০৭ সালে পান নীলকণ্ঠ পুরস্কার।
ওড়িশা থেকে দুবার বিজেপির টিকেটে পার্লামেন্ট সদস্য নির্বাচিত হন তিনি। বিজেপি-বিজেডির জোট সরকারের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন দ্রৌপদী। এছাড়া রায়রংপুর এলাকা থেকে নির্বাচিত হয়ে ওড়িশা রাজ্যসভায়ও প্রতিনিধিত্ব করেন।
দ্রৌপদী ২০১৫ সালে হন ঝাড়খণ্ডের প্রথম নারী গভর্নর। দায়িত্ব পালন করেন পূর্ণ মেয়াদে। ২০১৭ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনেও বিজেপিতে শক্ত প্রার্থী ছিলেন তিনি। তবে বিহারের তৎকালীন গভর্নর দলিত সম্প্রদায়ের সদস্য রাম নাথ কোভিন্দ প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন।
Leave a Reply