সৌরভ সোহরাব, সিংড়া(নাটোর) প্রতিনিধিঃ
নাটোরের সিংড়ার উপজেলার বিয়াশ কালিমাতা শিবশংকরের মেলা আগামী ১০ এপ্রিল, ২৭ বৈশাখ রোজ মঙ্গলবার।
প্রতি বছর বৈশাখের শেষ মঙ্গলবার উপজেলার ২ নং ডাহিয়া ইউনিয়নের বিয়াশ স্কুল মাঠে ১ দিন ব্যাপী এ মেলা অনুষ্ঠিত হয়।
প্রায় ৩ দশকেরও বেশি সময় ধরে এ মেলা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। মহামারী করোনার কারনে গত ২ বছর এ মেলা বন্দ ছিল। ২ বছর পর এ বছর মেলা অনুষ্ঠিত হওয়ায় মেলাবাসীদের মধ্যে আনন্দ উৎসব লক্ষ করা যাচ্ছে। বিয়াশ, আয়েশ, মাধা বাশঁ বাড়িয়া, ছাতুয়া, বড় আদিমপুর, পাঁচপাকিয়া, ইছল বাড়িয়া, ডাহিয়া,কাউয়াটিকরী, বেড়াবাড়ি, পারিল, খোলা বাড়িয়া, ঠেঙ্গাপাকুড়িয়া গ্রাম সহ আশে পাশের প্রায় ১৫ থেকে ২০ টি গ্রামের মানুষ এই মেলাকে কেন্দ্র করে লোক কুটুম ও জামাই ঝি নিয়ে উৎসব পালন করে থাকে।
বিয়াশ মেলার বড় আকর্ষন আগাম জাতের টসটসে লিচু ফল। এ ছাড়া দেশি প্রজাতির বড় মাছ, তরতাজা গরু ছাগলের মাংস প্রচুর পরিমানে বিক্রয় হয়। নাগোর দোলা, মটর সাইকেল খেলা ও নানা রকম খেলনা সামগ্রী মেলার সৌন্দর্যকে বৃদ্ধি করে। শীতল পাটি, কাঠ ফার্নিচার, ডালা,কুলা সহ গৃহস্থালির হরেক রকম প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র পাওয়া যায় এই বিয়াশ মেলায়।
স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, বিয়াশ মিস্ত্রি পাড়ার শ্রী শিবসংকর ১৯৯২ সালে প্রথম এই মেলার উদ্যোগ নেন। মেলার শুরুতে প্রথম কয়েক বছর বিয়াশ কালি বাড়ির বটতলায় এ মেলা অনুষ্ঠিত হয়। মেলাকে কেন্দ্র করে ওই সময়ে হিন্দু ধর্মাবলম্বীর শাস্ত্রীয় মতে পাটা বলি দিয়ে কালিমাতার পুজা করা হতো।
পরে স্থানীয়দের হস্তক্ষেপে পাটা বলি বন্দ হলে মেলাটি সকল শ্রেণি মানুষের উৎসবে পরিনত হয় এবং মেলাটি স্থানান্তর করে বিয়াশ স্কুল মাঠে আনা হয়।
মেলার প্রথম উদ্যোক্তা শিবশংকর বলেন, মেলার শুরুতে কয়েক বছর আমাকে অনেক পরিশ্রম করতে হয়েছে। ওই সময়ে নিজেই বিয়াশ, বারুহাস সহ হাটে হাটে ঢোল পিটিয়ে মানুষকে মেলার কথা জানিয়ে দিতাম। ভগমানের কৃপায় আমি মহা খুশি যে আমার উদ্যোগে মেলাটি আজ অনেক বড় হয়েছে। কিন্তু বড়ই দুঃখ আর কষ্টের কথা মেলাটি সরকারী ভাবে ডাক হওয়ায় মেলায় কারও কাছ থেকে আগের মত আর্থিক সহযোগিতা পাই না। আমার জমি জমা নাই। আয় রোজগার করার মত কোন সামর্থ্যনও নাই। পথে পথে মেলার দাওয়াত দিয়ে যে যা দেয় তাই দিয়ে বছরের খোরাক উঠে না। স্ত্রী সন্তান নিয়ে সারা বছর খেয়ে না খেয়ে দিন কাটে।
২ নং ডাহিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সিরাজুল মজিদ মামুন বলেন, এই অঞ্চলে বছরের প্রধান ফসল বোরো ধান কাটা মাড়াই শেষে এই মেলা অনুষ্ঠিত হওয়ায় মেলার জৌলুস দিন দিন বেড়ে যাচ্ছে। মেলায় এসে কেউ যেন হয়রানির শিকার না হয় এবং সাধারণ মানুষ যাতে স্বস্তিতে মেলার উৎসব পালন করতে পারে সে দিকে আমাদের সব ধরনের সহযোগিতা ও নজরদারি থাকবে ইনশা আল্লা।
বা/প্রে/সৌরভ সোহরাব
Leave a Reply