হাওর এলাকায় পানির প্রবাহ ঠিক রাখতে নতুন করে রাস্তাঘাট না করে এলিভেটেড সড়ক করার নির্দেশনা দিয়েছে মন্ত্রিসভা। সোমবার দুপুরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে সচিবালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে এ নির্দেশনার সিদ্ধান্ত জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম।
বৈঠকের পর সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সচিব বলেন, মন্ত্রিসভায় সুস্পষ্ট নির্দেশনা দেয়া হয়েছে, হাওর এলাকায় কোনো রাস্তাঘাট আর করা যাবে না। এ ছাড়া যে সব রাস্তা হয়েছে, সেখানে আধা কিলোমিটার পরপর দেড় শ থেকে দুই শ মিটারের সেতু করে দেয়া যায় কি না, সেটিও দেখতে বলা হয়েছে। বিভিন্ন জায়গায় সেতু আছে, তারপরও সার্ভে করতে বলা হয়েছে সড়কের কারণে যদি কোথাও পানি আটকে যায়, তাহলে আধা কিলোমিটার বা যৌক্তিক দূরত্বে সেতু করা যায় কি না, সেটা বিবেচনা করতে। হাওর এলাকায় আগাম বন্যা পরিস্থিতি এবং ধানের ক্ষতির বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করতে গিয়ে এই নির্দেশনা দেয়া হয়।
কিশোরগঞ্জ জেলায় হাওরের বুকে ইটনা থেকে মিঠামইন হয়ে অষ্টগ্রাম পর্যন্ত ২৯.৭৩ কিলোমিটার দীর্ঘ সড়ক চালু হয় ২০২০ সালের ৮ অক্টোবর। হাওরের বিশাল জলরাশির মাঝখানে সড়কটি এখন আকর্ষণীয় পর্যটনস্থলে পরিণত হয়েছে। শুকনো মৌসুমে হাওরবাসীর চলাচলও সহজ হয়েছে।
কিন্তু এ সড়কের কারণে বর্ষায় পানি প্রবাহে বাধা সৃষ্টি হওয়ায় পরিবেশ এবং জীববৈচিত্র্য হুমকির মুখে পড়ছে বলে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।
এখন ওই সড়কে সেতুর সংখ্যা বাড়িয়ে পানি প্রবাহ বাড়ানো যায় কি না, সেই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে জানিয়ে খন্দকার আনোয়ারুল বলেন, “পারটিকুলারলি এটা দেখতে বলা হয়েছে, সিলেটের (অঞ্চল) পানিটা মূলত নামে অষ্টগ্রামের দিক দিয়ে। এখানে যে রাস্তাটা করা হয়েছে মিঠামইন থেকে অষ্টগ্রাম, সেটাতে কোনো এফেক্ট হল কি না- এটাও দেখতে বলা হয়েছে।
উজানের ঢলে এবার সুনামগঞ্জের হাওর এলাকায় অন্তত পাঁচটি ফসল রক্ষা বাঁধ ভেঙে বিপুল জমির বোরো ধান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
সে প্রসঙ্গে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, বছরে প্রায় ৫ হাজার মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয় ওই এলাকায়। কিন্তু ১ থেকে ৬ এপ্রিল হয়েছে ১২০০ মিলিমিটারের বেশি।
এর ফলে স্বাভাবিকভাবেই উপর (উজান) থেকে পানি চলে এসেছে। প্রায় ৫ হাজার হেক্টর জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেখানে প্রায় ২ লাখ ৭০ হাজার হেক্টর চাষ হয়। আজকেও ডিসিদের সাথে কথা বলেছি। যদি আর বৃষ্টি না হয়, তাহলে ভালো অবস্থায় থাকবে।
Leave a Reply