নিজস্ব প্রতিনিধিঃ অক্সিজেনের পরিমান কম ও মাছ বিহীন দূষিত বুড়িগঙ্গা নদীতে এখন রাক্ষুসে সাকার ফিশে সয়লাব। এর আসল নাম সাকার মাউথ ক্যাটফিশ।
বুড়িগঙ্গার পাড়ে দাড়ালেই দেখা মিলবে পানির মধ্যে শত শত সাকার মাছ। প্রথমদিকে মাছটি কেউ কেউ বিক্রির উদ্দেশ্যে ধরলেও খাওয়ার উপযোগী না হওয়ায় এখন আর কেউ ধরছেনা। দ্রুত বংশবৃদ্ধি করা এ মাছ পানি ছাড়াও ২৪ ঘন্টা বেঁচে থাকতে পারে। শখের বসে অ্যাকোরিয়ামে পালিত বিদেশি এই মাছ এখন উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সংশ্লিষ্টদের ধারনা দ্রæত এ বিষয়ে পদক্ষেপ না নিলে এটি আমাদের দেশীয় প্রজাতির মাছের জন্য হুমকি হয়ে দাড়াবে।
বুড়িগঙ্গা নদীর সদরঘাট এলাকার ঘাট শ্রমিক মোঃ ইয়াসিন জানান, “গত বছরও শীতের সময় নদীর পানিতে প্রচুর পরিমান শিং মাছ পাওয়া যেত। আর এখন অন্য কোন মাছ চোঁখে পড়েনা। চারিদিকে শুধু চ্যাকভ্যাগা ( সাকার) মাছ।” হাফিজুর নামের এক নৌকা মাঝি জানান, ‘যে নদীতে বর্ষার স্বচ্ছ পানিতেও মাছ থাকেনা সেখানে এখন চ্যাকভ্যাগা দিয়ে ভরা। আমরা নদীর পানিতে গোসল করলেও এই মাছের পিঠে বিষাক্ত কাটা থাকায় ভয়ে এখন আর কেউ নদীতে নামেনা।’ স্থানীয়দের কেউ এটা চ্যাকভেগা বা কাটা মাছ নামে চিনলেও কোথা থেকে এ মাছ এসেছে তা জানাতে পারেনি কেউ।
কেরানীগঞ্জ উপজেলা সিনিয়র মৎস কর্মকর্তা মোঃ সেলিম রেজা জানান, নব্বই দশকে বিদেশ থেকে নিয়ে আসা শোভা বর্ধণকারী এ মাছটি হয়তো অ্যাকোরিয়াম থেকে বিভিন্ন জলাশয়ে ছড়িয়ে পড়েছে। তবে বুড়িগঙ্গা নদীতে অনেক ময়লা জাতীয় খাবার থাকায় এরা সেখানে দীর্ঘসময় বেঁচে থেকে দ্রুত বংশ বিস্তার করছে। এ মাছ অন্য দেশিয় মাছের খাবার খেয়ে থাকে বলে দেশীয় মাছ জলাশয়ে বেঁচে থাকতে পারেনা। এদিকে এটি পুকুর কিংবা স্থানীয় জলাশয়ে ছড়িয়ে পরায় হুমকির মুখে পরতে পারে দেশীয় মাছ । কিভাবে এটির বিস্তার রোধ করা যায় সে বিষয় সরকার কাজ করছে।
মাছ নিয়ে গবেষণা করা শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের মৎস বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মীর মোহাম্মদ আলী জানান, যে কোন পরিবেশে খাপ খেয়ে বেঁচে থাকতে পারে এই সাকার বা ক্যাট ফিশ। এটি শুধু বুড়িগঙ্গায় নয় সারা দেশের পুকুর কিংবা জলাশয়ে পাওয়া যাচ্ছে। এই মাছটি ভয়ংকর, কারণ এটি দেশীয় প্রজাতির মাছের ডিম খেয়ে ফেলে। দ্রুত বংশ বিস্তার করা এই সাকার মাছের বিস্তার রোধ না করা হলে হুমকির মূখে পরবে দেশীয় প্রজাতির মাছ।
Leave a Reply