নিজস্ব প্রতিনিধিঃ জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে চট্টগ্রাম, রাজশাহী, বরিশাল ও রংপুরসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে শুক্রবার সকাল থেকে বাস ও পণ্যবাহী যান চলাচল বন্ধের ঘোষণা দিয়েছেন পরিবহন মালিকরা।
ডিজেলের দাম ২৪ ঘণ্টার মধ্যে না কমালে পণ্য পরিবহন অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধেরও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ট্রাক কার্ভাডভ্যান মালিক-শ্রমিক সমিতি। এছাড়া ডিজেলের বাড়তি দামের সঙ্গে সমন্বয় করে গণপরিহনের ভাড়া পূর্ণমুল্যায়নের জন্য বিআরটিকে চিঠিও দিয়েছে মালিক সমিতি।
তারা বলছেন, করোনার কারণে এমনিতেই মালিক-শ্রমিকরা ক্ষতিগ্রস্ত; এই পরিস্থিতিতে পরিবহন সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলাপ না করে জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি অযৌক্তিক। বিশ্ববাজারে দাম বাড়ায় বুধবার রাতে জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির ঘোষণা আসে। ঘোষণার পর বৃহস্পতিবার সকাল থেকে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে গণপরিবহন ও পণ্যবাহী যান চলাচল বন্ধের ডাক দেয় পরিবহন মালিকদের বিভিন্ন সংগঠন। চট্টগ্রাম নগরীতে শুক্রবার সকাল থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য গণপরিবহন বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে মেট্রোপলিটন পরিবহন মালিক গ্রুপ। চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পরিবহন মালিক গ্রুপের সভাপতি বেলায়েত হোসেন বলছেন, জ্বালানির দাম বাড়ায় প্রতিদিন একেকটি বাসে বাড়তি দুই হাজার টাকা গুনতে হবে।
উত্তরাঞ্চল থেকেও শুক্রবার সকালে সব যানবাহন বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে মোটর শ্রমিক ইউনিয়ন। তেলের দাম না কমানো পর্যন্ত এ কর্মসূচি চলবে বলে জানিয়েছে সংগঠনটি। একই দাবিতে বাস চলাচল বন্ধের ঘোষণা দিয়েছেন রাজশাহী সড়ক পরিবহন গ্রুপ। ফেডারেশনের নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানান, রাজশাহী সড়ক পরিবহন গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক মতিউল হক টিটু। জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার প্রতিবাদে বরিশাল থেকেও সব ধরনের যাত্রী ও পণ্যবাহী যান চলাচল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। একই দাবিতে বাস ও ট্রাক চলাচল বন্ধের ঘোষণা এসেছে টাঙ্গাইল থেকেও। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন এবং বাংলাদেশ ট্রাক-কভার্ড ভ্যান ড্রাইভার ইউনিয়ন বলেছে, দাম বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত ২৪ ঘণ্টার মধ্যে প্রত্যাহার না হলে শুক্রবার ভোর ৬টা থেকে তারা অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘটে যাবেন।
এদিকে তেলের দাম বৃদ্ধির প্রথমদিনে অধিকাংশ পরিহন আগের ভাড়া নিয়েছে। বুধবার রাতে লিটারে ডিজেলের দাম ১৫ টাকা বাড়ায় গণপরিবহনে ভাড়া বাড়ার শংঙ্কা নিয়ে বৃহস্পতিবার সকালে থেকে রাজধানীর বিভিন্ন বাসস্টান্ডে অপেক্ষা করতে দেখা যায় অফিসগামী যাত্রীদের। সরকারের এমন সিদ্ধান্তের ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানান তারা। তবে, বিচ্ছিন্ন কিছু গণপরিবহন ছাড়া বেশিরভাগ পরিবহনই আগের ভাড়ায় যাত্রী পরিবহন করতে দেখা যায়। এখন পর্যন্ত মালিকপক্ষের কাছ থেকে ভাড়া বাড়ানোর বিষয়ে কোনো নির্দেশনা নেই বলে জানান পরিবহন শ্রমিকরা। তবে, রোববার থেকে ভাড়া বাড়ানোর কথা জানান তারা। পরিবহন নেতারা বলছেন, তেলের দামের সঙ্গে সমন্বয় করে ভাড়া বাড়াতে বিআরটিকে চিঠি দিয়েছেন তারা। দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে যে কোনো পেরিস্থিতির জন্য মালিক পক্ষ দায়ী থাকবে না বলেও সাফ জানিয়ে দেন তারা। পরিবহন ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনা না করে হঠাৎ তেলের দাম বৃদ্ধির সিদ্ধান্তে নাখোশ পরিবহন নেতারা।
Leave a Reply