1. ashiqnur96@gmail.com : editor :
রবিবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ০২:২৬ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম :
পাঁচ দশকের ব্যবধানে প্রথম কোনো পাকিস্তানি জাহাজ সরাসরি বাংলাদেশে আওয়ামী লীগসহ ২৬টি দলের মতামত না চাওয়ার ব্যাখ্যা দিয়েছেনঃ সংস্কার কমিশন সরকার পরিচালনায় অদক্ষতা সামনে এলে জনগণ তা মেনে নেবে নাঃ তারেক রহমান আজিমপুরে বাসা থেকে অপহৃত আট মাসের সেই শিশু উদ্ধার জুমার নামাজের খুতবার গুরুত্ব কেরানীগঞ্জে দেড় কোটি মুল্যের সরকারি জমি উদ্ধার ক্রীড়া সংগঠক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব সাইমন চৌধুরীকে সন্মাননা প্রদান অপহরণ ও ধর্ষণে সহযোগিতার মামলায় সাবেক ভূমিমন্ত্রী নারায়ন চন্দ্র কারাগারে ঢালাও মামলার প্রবণতা বিব্রতকরঃ আইন উপদেষ্টা খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের বিরুদ্ধে করা তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনের মামলা বাতিল

কথিত ডাক্তারের চিকিৎসায় পা হারালো নবজাতক

  • সর্বশেষ আপডেট : মঙ্গলবার, ৫ অক্টোবর, ২০২১
 ঢাকার কেরানীগঞ্জে কথিত ডাক্তারের ভুল চিকিৎসায় পা হারিয়ে পঙ্গু ২৫ দিনের শিশু অনিক। ঘটনাটি দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের আবদুল্লাহ্পুর এলাকার কলাকান্দি গ্রামে। একই গ্রামের আবুল বাশার ও সীমা বেগম দম্পতির প্রথম সন্তান অনিক। জন্মের ৬ দিন পর কান্না থামানোর জন্য শিশুটিকে স্থানীয় কথিত  ডাক্তার দেব কিশোর সরকারের কাছে নিয়ে যায় শিশুর মা।
 স্থানীয় মাতবর খবির জানান, আব্দুল্লাপুর বাজারে একটি দোকান নিয়ে ঝাড়ফুক ও কিছু ওষুধ নিয়ে কবিরাজি করেন দেব কিশোর সরকার। এলাকায় তাকে অনেকে ডাক্তার নামে চেনে। সেই সুবাদে স্বর্না ফার্মেসি নাম দিয়ে দোকানটি চালান কথিত ডাক্তার দেব কিশোর সরকার। কিশোরের বাবা হরিপদ একইভাবে কবিরাজি করতেন বলে জানান মাদবর।

শিশুর মা সীমা জানান, কান্না কমানোর জন্য ওই ফার্মসিতে গেলে ঝাড়-ফুক আর অষুধের সাথে শিশুটির পায়ে একটি ইনজেকশন পুশ করে কথিত ওই ডাক্তার। এতে কান্না নাথেমে উল্টো বেড়ে যায়। পরের দিন ওই ডাক্তারের কাছে নিলে সে আরও একটি ইনজেকশন দেয় শিশুটির পায়ে। ইনজেশনের বিষক্রিয়ায় শিশুর ডান পায়ের হাটুর নিচের অংশ কালো হয়ে যায়। পরে শিশুর এমন অবস্থার কথা ওই  চিকিৎসকে জানালে সে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজধানীর কোনো ভালো হাসপাতালে নেয়ার জন্য পরামর্শ দেয়। তবে তার দেয়া ইনজেকশনে এমন হয়েছে বললে দেব কিশোর সরকার শিশুর অভিভাবকের উপর ক্ষেপে যায়। উপায় না পেয়ে স্থানীয়দের কাছে অভিযোগ করে শিশুটির অভিভাবকরা। স্থানীয়দের চাপেরমুখে কথিত ওই ডাক্তার শিশুটির চিকিৎসার ভার বহন করার কথা বলে রাজধানীর কয়েকটি হাসপাতালে শিশুটিকে নিয়ে ঘোরাঘুরি করে।

শিশু অনিকের বাবা আবুল বাসার জানান, শিশুর কান্না থামানোর জন্য ওই চিকিৎসকের কাছে নেয়ার পর তার শিশুর ডান পায়ে দুদিন দুটো ইনজেকশন দেয়। আর তখন থেকেই তার বাচ্চার পা কালো হতে শুরু করে। পরে স্থানীয়দের কাছে অভিযোগ দিলে কথিত ডাক্তারের সহায়তায় ৮ দিন বয়সী শিশুটিকে প্রথমে গেন্ডারিয়ার আজগর আলী হসপিটালে নিলে সেখানে চিকিৎসক শিশুটিকে ভর্তি না করলে শ্যামলী স্পেশালাইজড হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে দুদিন রাখার পরে শিশুটির অবস্থার অবনতি হলে ধানমন্ডির মাদার কেয়ার হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করেন। সে হাসপাতালের চিকিৎসক পরীক্ষার পর জানতে পারেন শিশু অনিকের পায়ে পঁচন ধরেছে। দ্রুত পা কেটে না ফেললে আরও বেশী ক্ষতি হতে পারে। শেষে গত ২৬ সেপ্টেম্বর শিশু অনিকের ডান পায়ে অপারেশন করে হাটুর নিচের অংশ কেটে ফেলা হয়।
এদিকে অবুঝ শিশুকে ভুল চিকিৎসা দিয়ে পঙ্গু করার কথিত ডাক্তার দেব কিশোর সরকার এ বিষয়ে বলেন, ‘আমি কেরানীগঞ্জের আব্দুল্লাহপুর বাজার ও শুভাঢ্যা এলাকায় দুটি চেম্বার নিয়ে ৩০ বছর ধরে ডাক্তারি করছি। আমার কাছে ওই শিশুটিকে অতিরিক্ত কান্না থামানোর জন্য শিশুর মা ও দাদী নিয়ে আসে। পরে আমি শিশুর কান্না থামাতে দুদিন ২টি ইনজেকশন দিয়েছি। অবশ্য সে ইনজেকশনে তেমন সমস্যা হয়নি। শিশুর পা একটু কালো হয়েছিল। ডাক্তার হিসেবে আমার পরিচিতি আছে।’ তিনি কোন বিষয়ের উপর ডাক্তারি পড়াশুনা করে সনদ পেয়েছেন সে বিষয়ে তার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি ততকালীন এরশাদ সরকারের আমলে মেট্রিকপাশ করে এমএলএম কোর্স করে ডাক্তারি সার্টিফিকেট গ্রহন করি। আমার বাবারও কবিরাজ হিসেবে পরিচিতি আছে।
এছাড়া শিশুটির চিকিৎসার জন্য আমি টাকাপয়সা দিয়ে সহায়তা করছি।
গত ৯ সেপ্টেম্বর জন্মগ্রহন করা শিশু অনিক ১৭ দিনের সময় ভুল চিকিৎসায় পা হারিয়ে এখন পরিবারের কাছে। এমন ভুল চিকিৎসার শিকার শিশুটির বিষয়ে কেরানীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা.মশিউর রহমান বললেন, শিশুটিকে আমাদের কাছে নিয়ে আসলে আমরা সহায়তা করব। এছাড়া যে ভূয়া চিকিৎসকের জন্য শিশুটির অঙ্গহানি হয়েছে তার বিরুদ্ধে আমাদের পক্ষ থেকে উপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। তিনি আরও বলেন, কেরানীগঞ্জে বিভিন্ন এলাকায় লাইসেন্স বিহীন ফার্মেসীতে বসে ডাক্তার না হয়েও যারা এই জাতীয় কাজ করে তাদের কাছ থেকে রোগীদের সাবধান থাকতে হবে।
সব হারিয়ে নিঃশ হয়ে পা হারানো শিশু অনিকের পরিবার চিকিৎসা ব্যয় বহন করতে না পেরে হাসপাতাল থেকে গত ৪ সেপ্টেম্বর সোমবার বাড়িতে নিয়ে আসেন।
কেরানীগঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাহাবুদ্দিন কবির বলেন, শিশু অনিকের পা হারানোর বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। যদি ওই শিশুর পরিবার কোন আইনি সহায়তা চান, পুলিশের পক্ষ থেকে সব ধরনের সাহায্য করা হবে।

আপনি সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো সংবাদ
    © ২০২৪ বুড়িগঙ্গা টিভি কর্তৃক সর্বসত্ব সংরক্ষিত।
 
Theme Customized By BreakingNews