জানা গেছে, সংবাদ প্রকাশের পর দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিনের সোনারগাঁও প্রতিনিধি মো. আল আমিন এর বিরুদ্ধে নারায়ণগঞ্জ আদালতে একটি মামলা দায়ের করা হয়। কিন্তু ‘প্রতিদিনের সংবাদ’ সহ বেশ কয়েকটি পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ হলেও আরও কারো নামে মামলা করা হয়নি। তার নামে কারো প্ররোচনায়, কারো স্বার্থ হাসিলের জন্য সালমা আক্তার মিথ্যা মামলা দায়ের করেন।
জানা গেছে, সোনারগাঁও উপজেলা জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক সালমা আক্তারের বিরুদ্ধে নাখোশ দলের নেতাকর্মীরাও। তার কার্যকলাপে উপজেলা বিএনপির নেতারা তাকে একাধিকবার সতর্ক করলেও তিনি কোন কর্নপাত না করে নিজের মতো যা কিছু তাই করছেন।
সোনারগাঁও উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আজহারুল ইসলাম মান্নান বলেন, দুজনই আমার এলাকার। আমি তাদের নিয়ে বিষয়টি মিমাংসা করে দিবো।
সোনারগাঁও উপজেলা মহিলা দলে সভাপতি রুমা আক্তার বলেন, এ ধরনের মিথ্যা মামলা দিয়ে একজন সাংবাদিকের মানসম্মানের হানি করা হয়েছে। তার সুনাম, খ্যাতি, মর্যাদা ও সম্মান বিনষ্ট করা হয়েছে। যা কোভাবেই কাম্য নয়।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে ‘সানলাইফ ইন্সুরেন্স কোম্পানী’র নামে প্রলোভন দেখিয়ে গ্রাহকদের কাছ থেকে ৩০ লাখ টাকা আদায় করেন সালমা আক্তার। যা তিনি অফিসে জমা না দিয়ে আত্মসাত করেন। এ ঘটনায় সালমা আক্তারের বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে মামলা দায়ের করা হয়। টাকা আত্মসাতের অভিযোগে তাকে চাকুরী থেকে বহিস্কার করা হয়।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে ইন্সুরেন্স কোম্পানীর টাকা আত্মসাত ও প্রতারণার অভিযোগে সালমা অঅক্তারের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। মোতাহার হোসেন নামে এক ব্যক্তি বাদি হয়ে ২০১৬ সালে ২০ ডিসেম্বর নারায়ণগঞ্জ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে মামলা করেন। মামলায় পাঁচ জনকে আসামি করা হয়।
এই মামলার দুই নাম্বার আসামি হলেন- মোসা. সালমা আক্তার। তার স্বামী নাম মীর্জা ওয়াসিম।
মামলার বিবরণে প্রকাশ, নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁ উপজেলার মোগড়াপাড়া চৌরাস্তায় খন্দকতার প্লাজায় ভাড়া নিয়ে ২০০৫ সালে ’সানলাইফ ইন্সুরেন্স কোম্পানী’র নামে অফিস পরিচালনা করে। এরপর প্রতারণার উদ্দেশ্যে অধিক মুনাফার লোভ দেখিয়ে সাধারণ মানুষকে গ্রাহক বানিয়ে টাকা আদায় করেন সালমা আক্তার। তিনি তখন ’সানলাইফ ইন্সুরেন্স কোম্পানীর’ বিভাগীয় কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
সালমা বেগম পাশবই ও রিসিভের মাধ্যমে ২৩৫ জন গ্রাহকের কাছ থেকে ৩০ লাখ টাকা আদায় করেন। এর সিংহভাগ টাকা তিনি আত্মসাত করেন। প্রতারণার অভিযোগে চাকরী থেকে সালমা আক্তারকে বহিস্কার করা হয়।
মামলায় প্রকাশ, ’সানলাইফ ইন্সুরেন্স কোম্পানী’ তাদের প্রতিষ্ঠানের সুনাম বজায় রাখতে প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে গ্রাহকদের ৮ লাখ টাকা ফেরত দেয়।
বিপুল পরিমান টাকা আত্মসাত করে চাকুরী বিচ্যুত হন সালমা আক্তার। এরপর ২০১০ সালে নারায়ণগঞ্জ জেলার সিদ্ধিরগঞ্জের সানারপাড় নামক স্থানে অফিস ভাড়া নেন। সেখানে ‘প্রগতি ফিউচার কো অপারেটিভ সোসাইটি লি:’ নামে পুনরায় প্রতারণা শুরু করেন সালমা আক্তার। পূর্বের টাকা ফেরত দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে সালমা আক্তার ৭৬ জন গ্রাহকের কাছ থেকে ২৬ লাখ টাকা আদায় করেন। একইভাবে ৩১১ জন গ্রাহকের কাছ থেকে ‘প্রগতি ফিউচার কো অপারেটিভ সোসাইটি লি:’ নামে ৬২ লাখ টাকা আত্মসাত করে উধাও হয়ে যান।
এক পর্যায়ে গ্রাহকদের চাপে ২০১৬ সালের ১৫ অক্টোবর মো. আলামিন ভুইয়ার বাড়িতে শালিশ বসে। সেসময় সালমা আক্তার গ্রাহকদের টাকা ফেরত দেওয়ার আঙ্গীকার করেন। কিন্তু টাকা না দিয়ে গ্রাহকদের প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়।
অভিযোগের বিষয়ে সালমা আক্তার কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি।
Leave a Reply