1. ashiqnur96@gmail.com : editor :
শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:৪৫ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম :
আজিমপুরে বাসা থেকে অপহৃত আট মাসের সেই শিশু উদ্ধার জুমার নামাজের খুতবার গুরুত্ব কেরানীগঞ্জে দেড় কোটি মুল্যের সরকারি জমি উদ্ধার ক্রীড়া সংগঠক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব সাইমন চৌধুরীকে সন্মাননা প্রদান অপহরণ ও ধর্ষণে সহযোগিতার মামলায় সাবেক ভূমিমন্ত্রী নারায়ন চন্দ্র কারাগারে ঢালাও মামলার প্রবণতা বিব্রতকরঃ আইন উপদেষ্টা খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের বিরুদ্ধে করা তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনের মামলা বাতিল বাসযাত্রীকে পুড়িয়ে হত্যার মামলায় সাবেক আইজিপি শহীদুল হকসহ তিনজনকে রিমান্ডে বিপিএল নতুন আসর শুরু হতে যাচ্ছে আগামী ৩০ ডিসেম্বর থেকে নদীতে ঝাঁপ দেয়া পুলিশ কর্মকর্তার স্ত্রীর মরদেহ উদ্ধার

যুবলীগ নেতা জাবেল হোসেন পাপন টোকাই থেকে কোটিপতি !!!

  • সর্বশেষ আপডেট : রবিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২১
ইনসেটে পাপনের ছবি

স্টাফ রিপোর্টার: রাজধানীর সদরঘাটের চিহ্নিত জুতাচোর থেকে যুবলীগ ৩৭ নং ওয়ার্ড সভাপতি জাবেল হোসেন পাপনের অঢেল সম্পদের সন্ধান পাওয়া গেছে। স্থানীয় রাজনীতিতে যুবলীগের সভাপতির পদটি যেন পাপনের কাছে আলাদিনের চেরাগ। ঘষা দিলেই কোটিপতি। প্রথম জীবনে সদরঘাটের জুতাচোর সিন্ডিকেটের মুলহোতা হিসেবে আয় উপার্জন শুরু করলেও রাজনীতির অন্তরালে চাঁদাবাজি, ছিনতাই, জমিদখল, জুয়ার আসর নিয়ন্ত্রন, মাদক ব্যবসা, মামলাবাজি, চিটিং ফিটিং সহ জোড়যুলুম করে অন্যের টাকা পয়সা হাতিয়ে নিয়েই এখন সে কোটিপতি। চাঁদাবাজ পাপন সদরঘাটের এক আতংকের নাম। আর এসব অপকর্ম আড়াল করতে যুবলীগ সভাপতি পদটিই তার কাছে যথেষ্ট। যুবলীগের চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরীকে ১০ লাখ টাকা ঘুষ দিয়ে ৩৭নং ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতির পদ ভাগিয়ে এনে উক্ত কমিটিতে পদ বানিজ্য করে অন্তত ৪০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে। এক একটি পদের জন্য কার কাছ থেকে কত টাকা নিয়েছেন তার একটা খতিয়ানও পাওয়া গেছে। অনুসন্ধানে জানা গেছে, অভাবে সংসারে জন্ম নেয়া জাবেল হোসেন পাপনের গ্রামের বাড়ী মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার কোলাপাড়া ইউনিয়ন ছেড়ে রাজধানীর সদরঘাটের লঞ্চ টার্মিনালে এসে কুলিমজুরের কাজ শুরু করে। কিন্তু হালাল রুজিতে তার পেট ভরে না। শুরু করে চুরি, ছিনতাই, পকেট কাটিং সহ নানা ধরনের অপকর্ম। বিভিন্ন অঞ্চল থেকে লঞ্চের যাত্রীরা সদরঘাটে আসা মাত্র তাদেরকে অজ্ঞান করে টাকা পয়সা হাতিয়ে নেয়া পাপনের পেশায় পরিনত হয়ে উঠে। গড়ে তুলেন চোরের সিন্ডিকেট। সদরঘাটের ফুটপাতের জুতার দোকান, কাপড়ের দোকানসহ লঞ্চের যাত্রীদের বিভিন্ন ধরনের মালামাল চুরি করে আয় ইনকাম ভালোই শুরু করেন। ২০০৮ সালে আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় আসার পর পাপনকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। ৩৭নং ওয়ার্ড যুবলীগের সাথে যুক্ত হয়ে বিশাল ক্ষমতার অধিকারী হয়ে উঠেন। চুরি ছিনতাই বাদ দিয়ে শুরু করেন সরাসরি চাঁদাবাজি। সুত্র জানায়, সদরঘাটের জুতাচোর সিন্ডিকেটের মুলহোতা হিসেবে প্রথম জীবন শুরু করার পর থেকে যুবলীগের রাজনীতিরি সাথে যুক্ত হয়ে জুতার ফুটপাত, পুরানো কাপড়ের ফুটপাত, হকার্স মাকের্ট, কাপড় ব্যবসায়ী, ফলের আড়ৎ, পাবলিক টয়েলেট, ভিক্টোরিয়া পার্ক সহ আশেপাশের পরিবহন স্ট্যান্ড থেকে মাসে ১০ লাখ টাকা উপরে চাঁদা আদায় করেন পাপন বাহিনী। বড় নেতৃত্ব পাওয়ার আশায় পাপন যুবলীগের বিতর্কিত সাবেক চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরী ১০ লাখ টাকা ঘুষ দিয়ে ঢাকা দক্ষিনের ৩৭নং ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতির পদটি ভাগিয়ে এনে উক্ত কমিটির অপর পদগুলো বিক্রি করে অন্তত ৪০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। কার কাছ থেকে কত টাকা নিয়েছেন তারও কিছুটা হিসাব সহ প্রমানপত্র পাওয়া গেছে ওই কমিটির সদস্যদের কাছে। সদরঘাটের সাউথ সিটির নিচতলায় পাপনের একটি জুয়ার বোর্ড ছিলো। আর এই জুয়ার বোর্ডটি পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন পাপনের ছোট শশুড় মামুন খান। এ এখান থেকে মামুন খান দৈনিক ১ হাজার টাকা হাজিরা নিতেন। জুয়ার বোর্ড থেকে সদরঘাটের একটি সমবায় সমিতিতে পাপনের নামে দৈনিক ৫ হাজার টাকা জমা রাখা হতো। উক্ত সমিতির মালিক মজিবর। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি সুত্র জানায়, ১৬ই ডিসেম্বর, ১৫ই আগষ্ট, ২১শে ফেব্রুয়ারী, ২৬ শে মার্চ সহ জাতীয় দিবসে অনুষ্ঠানের নামে সদরঘাটের ব্যবসায়ীদের জিম্মি করে কোটি কোটি টাকা চাঁদা আদায় করেন। রোজার সময় ঈদ উপলক্ষে সেলামী বাবদ বিভিন্ন ব্যবসায়ী নিকট থেকে অন্তত ২০ লাখ টাকা চাঁদা আদায় করেন। ঈদের দিন লটারী ছাড়ার নাম করে ৬ লাখ টাকার টিকিটে বিক্রি করেছেন অথচ লটারীর ড্র দেয় নাই। সুত্র জানায়, বিক্রমপুর গার্ডেন সিটির ব্যবসায়ী মো: শরিফ অপর এক ব্যবসায়ীর নিকট ১ কোটি ৪৫ লাখ টাকা পাওনা ছিলো। উক্ত টাকা উত্তোলনের জন্য শরিফের সাথে অর্ধেক অর্ধেক চুক্তি করেন পাপন। কিন্তু শরিফের টাকা উত্তোলন না করে ঐ ব্যবসায়ী নিকট থেকে ১০ লাখ টাকা উৎকোচ নিয়ে উল্টা শরিফকে প্রাননাশের হুমকি দেন পাপন। এঘটনায় প্রানভয়ে শরিফ কারোর কাছে বিচার চাইতে পারে নাই। একই ভাবে রহিম পাটুয়ারী নামের এক ব্যবসায়ীর ৪০ লাখ টাকা উঠানোর কাজে গিয়ে উল্টো প্রতিপক্ষের নিকট থেকে ৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে তাকে বিদেশ যাওয়ার সুযোগ করে দেন। ব্যবসায়ী বাবুল দাসকে তার ভাড়াকৃত দোকান থেকে উচ্ছেদ করার জন্য দোকানের মালিক পক্ষের নিকট থেকে পাপন ৩৮ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে বাবুল দাসের উপর নির্যাতন শুরু করেন। কিন্তু বাবুল দাসকে দোকান থেকে উচ্ছেদ করতে ব্যর্থ হয়ে বাবুল দাসের নিকট থেকে ১০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে তাকেই দোকানে বহাল রাখেন এবং মালিকপক্ষ যাতে বাবুল দাসের সাথে কোন ঝামেলা সৃষ্টি করতে না পারে সেইজন্য উক্ত মালিকপক্ষকে প্রাননাশের হুমকি দেন। আমবিয়া মার্কেটের দোকানদারের কাছে গ্রেটওয়াল মার্কেটের ব্যবসায়ী রাশেদের পাওনা ১০ লাখ টাকার মধ্যে ৬ লাখ টাকা পাপন শালিশের মাধ্যমে উত্তোলন করে ২ লাখ টাকা হাতে কেটে রেখে দেন এবং এই নিয়ে বাড়াবাড়ী করা যাবে না বলে রাশেদকে হুমকি ধামকি দেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক তেল বিক্রেতা জানায়, সদরঘাটের প্রতিটি লঞ্চের জন্য সে দীর্ঘদিন যাবৎ তেল বিক্রি করেন। কিন্তু পাপন ৩৭নং ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি হওয়ার পর মাসিক ২০ হাজার টাকা চাঁদা করে। চাঁদা না দিলে ব্যবসা করতে পারবো না। পরে অনেক দেনদরবার মাসিক ১০ হাজার টাকা চাঁদার বিনিময়ে ব্যবসা করার সুযোগ পেয়েছি। সদরঘাটে আমার মতো অন্তত ৩০ জন তেল ব্যবসায়ী আছে যারা পাপন বাহিনীকে নিয়মিত চাঁদা দিয়ে তেলের ব্যবসা চালায়। সুত্র জানায়, ইসলামপুর-সদরঘাটে প্রতিদিন রাতে ২ শতাধিক কাপড়ের কনটেইনার আসে। প্রতি কনটেইনার থেকে পাপন বাহিনী সহ আরো দুটি সিন্ডিকেটকে প্রতিবারে লোড/আনলোড করার জন্য ১ হাজার টাকা করে চাঁদা দিতে হয়। চাঁদা না দিয়ে কোন গাড়ি মাল নিয়ে আসা যাওয়া করতে পারেনা। এই খাতে পাপন বাহিনীর মাসে অন্তত ৫ লাখ টাকার উপরে চাঁদা আদায় হয়ে থাকে। ইসলামপুরে কাপড়ের ব্রান্ড নকল করার একটি সিন্ডিকেট রয়েছে। যারা বাংলাদেশী বা চায়না কাপড়ে জাপানী ব্রান্ডের সিল (নকল সিল) মেরে বেশী দামে বিক্রি করে। এই সিন্ডিকেটের নিকট থেকে পাপন মাসিক ৩ লাখ টাকা চাঁদা আদায় করে বলে জানায় ব্যবসায়ীরা।

আপনি সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো সংবাদ
    © ২০২৪ বুড়িগঙ্গা টিভি কর্তৃক সর্বসত্ব সংরক্ষিত।
 
Theme Customized By BreakingNews